বউ পেটানো’ সঠিক মনে করেন নারীরাই

 বউ পেটানো ঠিক, নাকি ঠিক নয়- বিতর্কিত এ প্রশ্ন নিয়ে এবার জরিপে নেমেছিল ভারতের ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে (এনএফএইচএস)। সমীক্ষায় প্রশ্ন ছিল-বউ পেটানো কি ঠিক, নাকি অন্যায়? পশ্চিমবঙ্গসহ ১৩ রাজ্যের ওপর চালানো জরিপের ফলাফলে জানানো হয়, পুরুষশাসিত সমাজের এই ঘৃণ্য সহিংসতাকে সঠিক বলে মনে করছেন নারীরাই! শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও আনন্দবাজার।



তেলেঙ্গানার ৮৩ দশমিক ৮ শতাংশ নারী বলেছেন, ঠিক। এ ক্ষেত্রে নারীদের মধ্যে সমীক্ষায় ‘হ্যাঁ’-এর বিচারে তেলেঙ্গানা যেমন শীর্ষে, তেমনি পুরুষদের মধ্যে সবার আগে কর্নাটক। কারণ, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার আগের রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, সারা ভারতের ৫২ শতাংশ নারী এবং ৪২ শতাংশ পুরুষ পারিবারিক সহিংসতাকে যুক্তিযুক্ত বলে মেনে নিচ্ছেন। আর সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বিভিন্ন রাজ্যে ওই শতকরা হার আশির ঘরে পৌঁছানোটা উদ্বেগেরই বিষয়।

দক্ষিণী রাজ্যের ৮১ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ মনে করেন, স্বামী যদি স্ত্রীকে মারেন, তাতে কোনো দোষ নেই! পশ্চিমবঙ্গসহ ১৩টি রাজ্যে এই সমীক্ষার আওতায় আসা নারীরাই মনে করছেন, শ্বশুরবাড়ির লোকদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করাটাই স্বামীর হাতে স্ত্রীর নিগ্রহের প্রধান কারণ।

ইদানীং ভারতের জাতীয় পরিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার প্রকাশিত ওই ফলাফলের কিছু ইতিবাচক দিক নিয়ে চর্চা হচ্ছে। যেমন-শহরাঞ্চলের ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলের ৭৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছেন। ভারতে নারীপ্রতি শিশুর জন্মহার নেমে এসেছে দুইয়ে। জন্মহারে এগিয়ে শিশুকন্যারা। তা সত্ত্বেও স্বামীর হাতে স্ত্রীর শারীরিক নিগ্রহকে যেভাবে সমর্থন করেছেন নারীদেরই একাংশ, তা উদ্বেগজনক।

২০১৯-২১ সালের মধ্যে এবারের সমীক্ষাটি হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গোয়া, গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, কর্নাটক, কেরালা, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, তেলেঙ্গানা, ত্রিপুরা এবং কেন্দ শাসিত জম্মু ও কাশ্মিরের নারী-পুরুষের ওপর।

কেন্দ্রীয় সমীক্ষাকর্মীরা প্রশ্ন করেছিলেন, স্বামী যদি স্ত্রীকে আঘাত করেন বা মারধর করেন, আপনার মতে কি তা যুক্তিসঙ্গত? ওই প্রশ্নেরই উত্তর বাছাই করে দেখা যায়, ‘হ্যাঁ’-এর শতকরা হিসাবে পুরুষদের মধ্যে কর্নাটক এবং নারীদের মধ্যে তেলাঙ্গানা শীর্ষে। দুই তালিকায়ই সবার শেষে হিমাচলপ্রদেশ। সে রাজ্যের মাত্র ১৪ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ নারী মনে করেন, কাজটা ঠিক।

নারীদের ‘হ্যাঁ’-এর তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ (৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ), কর্নাটক (৭৬ দশমিক ৯ শতাংশ), মণিপুর (৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ) এবং কেরালা (৫২.৪ শতাংশ)। পুরুষদের মধ্যে সমীক্ষায় এ ক্ষেত্রে শেষের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা (২১ দশমিক ৩ শতাংশ)।

Post a Comment

0 Comments