গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি

 


গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি পর্যালোচনা করছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া হিসেবে গণশুনানি হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত না হলেও গতকাল কমিশনের সদস্যরা অনির্ধারিত একটি বৈঠক করেছে জানা যায়। পেট্রোবাংলার পাঠানো প্রস্তাব আরও সুনির্দিষ্ট করতে তাদের চিঠি দেওয়া হবে বলে বিইআরসির এক কমিশন সদস্য আমাদের সময়কে জানিয়েছেন।

গত দশ বছরে দফায় দফায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ছে। গত দুই বছর ধরে মহামারী করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় আবার গ্যাস বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম এ বিষয়ে আমাদের সময়কে বলেন, আমরা শুরু থেকে বলে আসছি সরকারের ভুলনীতি এবং দুর্নীতির কারণেই বারবার গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাপনকে কঠিন করে তোলা হচ্ছে। মূল্য বৃদ্ধির এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়া কোথায় গিয়ে ঠেকবে কেউ জানে না। তিনি বলেন, ভুলনীতির ওপর চলছে জ্বালানি খাত।কমিশনের এক সদস্য বলেন, কমিশনে পাঠানো গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর পক্ষে পেট্রোবাংলা কমিশনে চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠির পক্ষে আরও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন। সে বিষয়ে অবহিত করে পেট্রোবাংলাকে কমিশন চিঠি দিবে। দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া হিসেবে গণশুনানি কবে হবে সেই বিষয়ে এখনো বিইআরসি সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এদিকে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের পর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বিইআরসিতে জমা দেয় পিডিবি। তবে পিডিবির প্রস্তাবে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হয়। এখন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তাব চূড়ান্ত করছে পিডিবি।

দেশে চলমান গ্যাস সংকটে দীর্ঘদিন ধরে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বাড়ছে ব্যয়বহুল জ্বালানি তেলের পাশাপাশি কয়লার ব্যবহার। সম্প্রতি ফার্নেস তেল আমদানিতে শুল্ক কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে সরকার। কয়লা আমদানিতে বসানো হয়েছে পাঁচ শতাংশ ভ্যাট। বাড়ানো হয়েছে ডিজেলের দাম।

পিডিবির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, যে পরিমাণ গ্যাস দরকার, সেটা তো দিতে পারছে না। বিশ^বাজারে এলএনজি এবং জ্বালানি তেলের দামও বাড়ছে। গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে রেকর্ড লোকসান হয়েছে। এ বছরও তেলের মূল্যবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি স্থানীয় গ্যাসের সরবরাহ আরও কমার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ওই কর্মকর্তা বলেন, গ্যাসের অভাবের কারণে প্রায় ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। সরকারের নির্দেশে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে গ্রাহককে বিদ্যুৎ দিতে হয়। ফলে প্রতিবছর একটা ঘাটতি থেকেই যায়। জ¦ালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ বছর ত্রিশ হাজার কোটি টাকার বেশি ঘাটতি হবে- এমন হিসাব কষে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারকে ভর্তুকি বাড়াতে হবে। ফলে সেই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিতে হবে কমিশনকে।

বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল বলেন, বিদ্যুতের পাইকারি দাম বৃদ্ধির জন্য পিডিবির একটি আবেদন পেয়েছি। কিন্তু তা প্রবিধান অনুযায়ী হয়নি। ফলে পরদিনই ফেরত পাঠিয়েছি। বিধি মোতাবেক ফের প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে।

Post a Comment

5 Comments

  1. দেশের আরও অনেক উন্নতি হবে ইনশাল্লাহ।

    ReplyDelete
  2. gas o electric bill jodi barte thake taile to amader onek problem e porte hobe

    ReplyDelete
  3. এমন হলে কি হবে

    ReplyDelete