ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

 

একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানিয়ে ৯ জানুয়ারি ১৯৯৮ কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক “মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানকে চিঠি দেন।

২৩ জানুয়ারি ১৯৯৮ জাতিসংঘ থেকে জানানো হয় নিয়ম অনুযায়ী, এ সংস্থা কোনো ব্যক্তির আবেদন বিবেচনায় নিতে পারে না। আবেদন আসতে হবে জাতিসংঘের যেকোনো সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে। এ প্রেক্ষিতে রফিকুল ইসলাম কানাডা প্রবাসী আরেক বাংলাদেশি নাগরিক আবদুস সালামকে নিয়ে সাতটি ভিন্ন ভাষার ১০ জন সদস্য মিলে The Mother Language Lovers of the World নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেন।
২৯ মার্চ ১৯৯৮ এ সংগঠনের পক্ষ থেকে আবার ১০ সদস্যের স্বাক্ষর সংবলিত সেই একই প্রস্তাব জাতিসংঘে পাঠানো হয়। জাতিসংঘ মহাসচিবের অফিস প্যারিসে অবস্থিত UNESCO’র সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়। ৪ এপ্রিল ১৯৯৯ UNESCO ফ্যাক্সে পাঁচটি দেশের নাম এবং তাদের UNESCO অফিসের ঠিকানা দিয়ে ঐ সব দেশকে প্রস্তাবটি জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপনের অনুরোধ জানায়। দেশ পাঁচটি— কানাডা, ভারত, ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং বাংলাদেশ।

অবশেষে ৫ অক্টোবর-১৫ নভেম্বর ১৯৯৯ অনুষ্ঠিত UNESCO’র নির্বাহী পরিষদের ১৫৭তম অধিবেশনে প্রস্তাবটি স্বীকৃতি লাভ করে। এরপর UNESCO’র দ্বি-বার্ষিক ৩০তম সাধারণ সভার শেষ দিন অর্থাৎ ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। সেদিনই প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ২০০০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

Post a Comment

0 Comments