সোনার বাংলা গড়ার শপথ

 


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ার শপথ নিল জাতি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে মহান বিজয় দিবসে দেশবাসীকে এ শপথবাক্য পাঠ করান  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শপথ’ শিরোনামের শপথবাক্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষের বিজয় দিবসে দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি যে, শহিদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। দেশকে ভালোবাসব। দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ  ১৬ ডিসেম্বর ২০২১। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের দিন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয় দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম ও যুদ্ধের মধ্য দিয়েই আমরা অর্জন করি, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পরিচালনা করেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আদায়ের জন্য বঙ্গবন্ধু তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পুরো পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু বাঙালি জাতি পাকিস্তান শাসন করবে, এটা পাকিস্তানি সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান মেনে নিতে পারেনি। তাই বাঙালিদের ওপর শুরু করে নিপীড়ন-নির্যাতন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ঐতিহাসিক ভাষণে বাংলাদেশের মানুষকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রতি জেলা, মহকুমা, থানা ও গ্রামে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। শুরু হয় এই আন্দোলন। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য উদ্ধৃতি দিয়ে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বাংলাদেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুর সেই নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই রাতেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি সেই ঘোষণায় বলেন, ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছো, যাহার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও। সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন তখন, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তার এই স্বাধীনতার ঘোষণা ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন ইপিআর হেডকোয়ার্টার থেকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে প্রেরণ করা হয়।  তারা জেলা থেকে থানা পর্যন্ত এই বার্তা প্রচার এবং সেই সঙ্গে প্রচারপত্র তৈরি করেও বিলি করেন। ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রাম বেতারকেন্দ্র থেকে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ করেন। এরপর একে একে অন্য নেতারাও বারবার এই ঘোষণা পাঠ করতে থাকেন। 

Post a Comment

0 Comments