ঢাকার খুব কাছেই ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহরের নাম।
বড় নগর, খাস নগর, পানাম নগর- প্রাচীন সোনারগাঁওয়ের এই তিন নগরের মধ্যে পানাম ছিলো সবচেয়ে আকর্ষণীয় নগর। পানাম নগরীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার বার ভূঁইয়াদের ইতিহাস। এটি অনেকের কাছে ‘হারানো নগরী’ নামেও পরিচিত। সোনারগাঁওয়ে ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠে এই নগর।
শীতলক্ষ্যা আর মেঘনার ঘাটে প্রতিদিনই ভিড়তো পালতোলা নৌকা। ওই সময়ই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে ইউরোপীয় অনুপ্রেরণায় নতুন ঔপনিবেশিক স্থাপত্যরীতিতে গড়ে উঠে পানাম নগরী। পরবর্তীতে এই পোশাক বাণিজ্যের স্থান দখল করে নেয় নীল বাণিজ্য।
এখানে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য অট্টালিকা, মসজিদ, মন্দির, মঠ, ঠাকুরঘর, গোসলখানা, নাচ ঘর, খাজাঞ্চিখানা, টাকশাল, দরবার কক্ষ, প্রশস্ত দেয়াল, ভোজনালয়, বিচারালয়, প্রমোদ কুঞ্জ ইত্যাদি। বর্তমানে পানাম নগরে রাস্তার দু’ধারে পুরোনো যেসব ভবন দেখা যায় তা মূলত ব্রিটিশদের সহায়তায় গড়ে উঠা।
বর্তমানে পানাম নগরের দু’ধারে ঔপনিবেশিক আমলের মোট ৫২টি স্থাপনা রয়েছে। এর উত্তরদিকে ৩১টি ও দক্ষিণদিকে ২১টি স্থাপনা অবস্থিত। স্থাপনাগুলোর স্থাপত্যে ইউরোপীয় শিল্পরীতির সঙ্গে মোঘল শিল্পরীতির মিশ্রণ দেখতে পাওয়া যায়।
তা ছাড়াও নগরীর আশেপাশে ছড়িয়ে আছে ঈসা খাঁ ও তাঁর ছেলে মুসা খাঁর প্রমোদ ভবন, ফতেহ শাহের মসজিদ, সোনাকান্দা দুর্গ, পঞ্চপীরের মাজার, কদম রসুল, চিলেকোঠাসহ বহু পুরাতাত্ত্বিক গুরুত্ববহ স্থাপনা।
কথা হয় পানাম নগর ঘুরতে আসা এক পর্যটকের সঙ্গে। তিনি জানান, ব্যস্ত যান্ত্রিক নগরীর একঘেয়েমিতা দূর করতে উপযুক্ত দর্শনীয় স্থান হল পানাম নগর।ইতিহাস থেকে জানা যায়, ঈসা খাঁর আমলে বাংলার রাজধানী ছিল এই পানাম নগর। পানাম নগরী থেকেই তখন সোনারগাঁয়ের রাজকার্য পরিচালিত হতো। পানামের পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদীপথে বিলেত থেকে আসতো বিলাতি থানকাপড় এবং দেশ থেকে মসলিন কাপড় যেতো।
1 Comments
নাইছ
ReplyDelete