শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত, শীতে কাঁপছে যেসকল জেলা



দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তৃতীয় দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। আরও নতুন এলাকায় শনিবার তীব্র শীতের প্রকোপ বিস্তার লাভ করেছে। গত শুক্রবার ৬ জেলা ও ২ বিভাগে শৈত্যপ্রবাহের দাপট ছিল, শনিবার ৮ জেলা ও চার বিভাগে তা বেড়েছে। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কিছুটা উন্নতি হয়। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। গত শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামে, ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ এটি। আরও অন্তত দুদিন এ পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। তবে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরআগে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে বৃষ্টি হলে ফের শীত বাড়তে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

আবহাওয়া বিভাগ দেশের ৪২ স্টেশনে আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিস্থিতির ওপর প্রতিদিন তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করে থাকে। সংস্থাটির প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পরিমাণ আগের তুলনায় বেশি থাকলেও উল্লিখিত স্টেশনগুলোর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রির মধ্যে আছে। অন্যদিকে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্যও বেশ কম। সাধারণত সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রি বা এর নিচে নেমে এলে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হয়। সেই হিসাবে প্রায় সারা দেশই শীতে কাঁপছে বলা যায়। কেননা, সর্বনিম্নের হিসাবে উপরের দিকে আছে ঢাকা। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু সর্বোচ্চ ২২ দশমিক ১ ডিগ্রি। অর্থাৎ, পার্থক্য মাত্র ৭ ডিগ্রির একটু বেশি। আবার দেশে শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কুতুবদিয়ায় ২৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি। কিন্তু সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি। অর্থাৎ উভয়ের পার্থক্য ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মানে হচ্ছে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রার এলাকায়ও ব্যাপক শীত পড়েছে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, আগের দিন গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। শনিবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিশোরগঞ্জ, ফেনী, বরিশাল। এছাড়া শৈত্যপ্রবাহভুক্ত বিভাগে যুক্ত হয় ময়মনসিংহ ও সিলেট। এই পরিস্থিতি আরও নতুন নতুন এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-


কুড়িগ্রাম : জেলায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে তীব্র ঠান্ডায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে কাজে বের হতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষ। শনিবার জেলার রাজারহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড কুয়াশায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। প্রতিদিন হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগের আক্রান্ত রোগী। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কের রোগীর সংখ্যা বেশি। কুড়িগ্রাম আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, আরও কয়েক দিন দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

পঞ্চগড় : জেলায় তাপমাত্রার পারদ নামায় বাড়ছে শীতের দাপট। কুয়াশার সঙ্গে হাড় কাঁপানো কনকনে শীত এ জনপদের মানুষকে কাবু হয়ে পড়েছে। ঘনকুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় কনকনে শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। গরম কাপড়ের অভাবে প্রান্তিক এ জনপদের শীতার্ত মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি এ দুই মাসে ৪৫ দিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।

দিনাজপুর : দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, গত দুদিন ধরেই (শুক্র ও শনিবার) দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে চলমান শৈত্যপ্রবাহ কিছুটা প্রশমিত হতে পারে এবং তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কিছুটা বাড়তে পারে। এদিকে অব্যাহত হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জেলার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিশেষ করে সকালে কাজের সন্ধানে বের হওয়া নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন বিপাকে।

চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) : উপজেলায় গত তিন দিনের শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাড়ছে শীতজনিত ভাইরাস জ্বর, সর্দিজ্বর, ঠান্ডাকাশি ও হাঁপানি রোগের প্রাদুর্ভাব। সেই সঙ্গে শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে দেখা দিয়েছে কোল্ড ডায়েরিয়া রোগের ছড়াছড়ি। উপজেলার চরাঞ্চল, নদী পাড়, বিভিন্ন বেড়িবাঁধ ও উন্মুক্ত ফসলি মাঠে বসবাসকারীরা তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, ‘গত কয়েক দিন ধরে অধিকাংশ রোগী শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।

শেরপুর : জেলায় কুয়াশার পরিমাণ অনেকটা কমে গেলেও ঠান্ডা বাতাসে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে। জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় বাতাসের বেগ আরও বেড়েছে। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শহর ও হাটবাজার ফাঁকা হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। মাঝরাতে হালকা কুয়াশার সঙ্গে বয়ে চলে উত্তরের কনকনে ঠান্ডা বাতাস। হালকা বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে শিশির। সকালে সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ নেই। বিকালের আগেই মিলিয়ে যাচ্ছে সূর্যের আলো।

Post a Comment

22 Comments

  1. sit onek beshi thakar jonno ghor theke o ber howa jacche na

    ReplyDelete
  2. তবে বৃষ্টি হলে ফের শীত বাড়তে পারে .

    ReplyDelete
  3. ঠান্ডার জন্য জীবন যাত্রা অনেকটাই থেমে গেছে।

    ReplyDelete
  4. গত কয়েক দিন ধরে শীতের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে

    ReplyDelete
  5. ei seete protiti samorthoban manusher uchit gorib osohai manusher pashe darano. Allah sokolke samortho omanusikota din, Amin.

    ReplyDelete
  6. মানিকগঞ্জে অনেক শীত পড়ছে।

    ReplyDelete
  7. শীত আর বেশি দিন নয় গরম আসতেছে

    ReplyDelete
  8. হুম অনেক শীত

    ReplyDelete
  9. এখন শীত অনেক বেশি

    ReplyDelete
  10. অসহ্য একটা শীত পড়েছে।
    কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি পড়ে মাটি ভেজার কারণে এই অবস্থা।

    ReplyDelete
  11. গত কয়েকদিন বেশি শীত পড়ছে।

    ReplyDelete
  12. অনেক ভাল একটি সাইট।

    ReplyDelete
  13. শীতের তীব্রতা অনেক বেশি

    ReplyDelete
  14. Blancebd maddome amara onek kicu dekte o jante parteci tai blancebd k donnobad

    ReplyDelete
  15. শীতের তীব্রতা অনেক বেশি

    ReplyDelete